Arambagh Times
কাউকে ছাড়ে না

নিজস্ব সংবাদদাতা : টেট দূর্নীতির কারণে হাইকোর্টের নির্দেশে যে 269 জন শিক্ষক শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করা হয়েছে, এমনকি এতদিন ধরে নেওয়া বেতনের টাকাও তাদের ফেরত দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেই চাকরি যাওয়া 269 জনের লিস্টে আরামবাগের এক তৃণমূল নেতার দুই মেয়ের নামও রয়েছে বলে জানা গেছে। এই তৃণমূলের নেতার বিরুদ্ধে শুধু তার নিজের দুই মেয়ের অবৈধ পথে চাকরি পাইয়ে দেওয়াই নয় এই এলাকায় অসংখ্য শিক্ষিত বেকার ছেলে মেয়েকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ইতিমধ্যেই নাকি প্রায় 4 লক্ষ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই মুহূর্তে হাইকোর্টের নির্দেশ জারির পর থেকেই কয়েক লক্ষ করে আগাম টাকা দিয়ে রাখা ছেলেমেয়েরা অসহায়ের মত চাকরি নয়, কষ্টার্জিত ঐ টাকা ফেরত চেয়ে নাকি উক্ত তৃণমূল নেতার কাছে বারবার আবেদন জানিয়েছেন, যদিও আদালতের টেট নিয়ে এই কঠোর ভূমিকা দেখা সত্বেও উক্ত তৃণমূল নেতা নাকি এখনো তাদের আশ্বাস দিয়ে চলেছেন ক’দিনের মধ্যেই সব ধামাচাপা পড়ে যাবে তারপর যারা আগাম টাকা দিয়েছে তাদের চাকরি হয়ে যাবেই। 2014 সালের দ্বিতীয় নিয়োগ তালিকায় থাকা 269 জনকে অবৈধভাবে বাড়তি এক নম্বর করে পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। যুক্তি খাড়া করা হয়েছে, প্রশ্নে ভুল থাকার জন্যই নাকি এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে বাকি ২৩ লক্ষ পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রে ঐ এক নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি কেন? কেন তাদের এক নম্বর থেকে বঞ্চিত করা হল? আর যখন হাইকোর্টের নির্দেশে 269 জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে চাকরি থেকে বরখাস্তের আদেশ এল তখন প্রত্যাশিত মতোই এই লিস্টে হুগলি জেলার 68 জনের নামের মধ্যে আরামবাগের শিবানী খাড়া, সীমা খাড়াকর্মকার এই দুই মহিলার নামও আছে, যারা উক্ত তৃণমূল নেতার কন্যা বলে জানা গেছে। একই সাথে উক্ত তৃণমূল নেতার বিজনেস পার্টনার এর ছেলে এবং বৌমার নামও আছে এবং আরামবাগ চক্রের এক শিক্ষকের নামও আছে বলে জানা গেছে। হয়তো আরও পরিচিত কারো নাম দ্রুত প্রকাশ্যে আসবে। প্রথম সারির এই তৃণমূল নেতা আবার একই সাথে আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, তার নাম গুণধর খাড়া। টেট-দুর্নীতিতে তার নাম জড়িয়ে থাকার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই ছিল, এ বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া জানতে গিয়ে বার বার ফোন করলেও তিনি সুইচ অফ করে রেখে দেওয়াই যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। যারা আঙুল তুলছেন ছেলে মেয়েরা কেন টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়ার পথ নিচ্ছেন তাদের দিকে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন এম এ এমএসসি বি এড, d.el.ed পাশ শিক্ষিত ছেলে মেয়েরা — এই অবস্থার জন্য দায়ী যে সমস্ত নেতারা কেন তাদের গ্রেফতার করা হবে না? কেন তারা টোপ দিয়ে দিচ্ছেন যেখানে কত শিক্ষিত ছেলে মেয়ে রোদে পুড়ে জলে ভিজে পথের উপর দীর্ঘদিন পড়ে আছেন প্যানেলে নাম থাকা সত্বেও তাদের চাকরি না হওয়ায় তাদের প্রাপ্য চাকরির দাবিতে? তাদের উপর চাকরি তো দূরের কথা নিত্যদিন পুলিশের লাথি আর লাঠির বাড়ি জুটছে। মায়া দয়া হীন অমানবিক তৃণমূলের কিছু মাথা তার পরেও লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে চাকরি পাইয়ে দিচ্ছেন, স্বজনপোষণ করছেন! আরামবাগের বেশ কিছু নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের বাড়ির বেশকিছু আত্মীয়-স্বজন এর চাকরি তারা বিভিন্ন পথে পাইয়ে দিয়েছেন যারা এখন বুক ফুলিয়ে চাকরি করছেন অথচ কত শিক্ষিত ছেলে মেয়ে সত্যিকারের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরি পাচ্ছে না। এমত অবস্থায় কেউ চাকরির নিশ্চয়তা দিয়ে টাকা চাইলে অনেকেই বাধ্য হচ্ছেন চাকরির প্রয়োজনে এই ফাঁদে পা দিতে। ভয়ঙ্কর বেকারত্বের সময়ে চাকরির প্রয়োজন আছে যে। সুযোগ নিয়ে এইসব নেতারা টোপ দিচ্ছেন আর আজ এই মুহূর্তে 269 জনের যে লিস্ট পাওয়া গেছে আগামী দিনে হয়তো তা আরো বাড়তে পারে। অবৈধভাবে চাকরি পাওয়ার লিস্ট বেড়ে যাবে আর যোগ্য ছেলেমেয়েরা পথে পথে ঘুরে বেড়াবে তাহলে কেন যারা টোপ দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন বা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছেন সত্যিকারের যোগ্যদের প্রাপ্য চাকরির পথ রুদ্ধ করে, তাদের কোমরে দড়ি পড়বে না? কেন শাস্তি হবে না? গুণধর খাড়া একজন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, তার বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর অভিযোগ, তিনি নাকি আট থেকে দশ লক্ষ টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন এবং দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এমন অভিযোগ উঠে আসছে, যদি এটা সত্যি হয় তাহলে তা ভয়ানক! বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে এই নেতার সঙ্গে নাকি আরামবাগ মহকুমার ও হুগলি জেলার বেশ কয়েকজন নেতাও যুক্ত। সবে মৌচাকে ঢিল পড়েছে এখন দেখার কান টেনে কতগুলো মাথা প্রকাশ্যে আসে।।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published.