এটা হলো বিশ্বের একমাত্র শিব মন্দির।সম্পূর্ণ একটা আস্ত পাহার খোদাই করে অষ্ট শতাব্দী তে বানানো হয়েছে। কৈলাশ মন্দির,,,,
রহস্যময় কৈলাস মন্দির!
পৃথিবীতে অনেক মন্দির আছে যা নিজের সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু ভারতে এমন একটি মন্দির আছে যেটি কোটি কোটি বছর ধরে রহস্য লুকিয়ে রেখেছে তার সৌন্দর্যের আড়ালে। মন্দিরটি হলো ঔরঙ্গাবাদের কৈলাশ মন্দির।
আমাদের প্রাচীন কালে অনেক কিছুই আবিষ্কার হয়েছে আবার সেগুলি প্রায় অনেক কিছুই লুপ্ত হয়ে গেছে। কিন্তু একথা স্বীকার করতেই হবে যে সেই সময়কার টেকনোলজি এখনকার থেকে অনেক বেশি উন্নত ছিল (যেমন পিরামিড কথা বলা যেতে পারে)। ঔরঙ্গাবাদের কৈলাশ মন্দিরও এমন এক সভ্যতার লোক বানিয়েছিলো যা আজকের সভ্যতার মানুষের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত ছিলো।
ঔরঙ্গাবাদের কৈলাশ মন্দির মহারাষ্ট্র জেলার প্রসিদ্ধ ইলোরা গুহার মধ্যে অবস্থিত। এই ইলোরা গুহাই পৃথিবীর সব থেকে প্রাচীন গুহা বলে মনে করা হয়। এখানে পাথর কেটে গুহা ও হিন্দু মন্দির (শিব মন্দির) তৈরী করা হয়েছে। যার নাম কৈলাশ মন্দির।
এটি একটি রহস্যময় শিব মন্দির। কেননা এরকম মন্দির তৈরী করা আজকের উন্নত বিজ্ঞানের যুগেও প্রায় অসম্ভব। এই মন্দির দেখে বিজ্ঞানীরা এতটাই হতবাক হয়ে গিয়েছিলো যে আজও পর্যন্ত জানা সম্ভব হয়নি মন্দিরটি কতদিনের পুরোনো আর কিভাবে মন্দিরটি তৈরী করা সম্ভব হলো।
কিছু বিজ্ঞানী এটাকে ১৯০০ বছরের পুরোনো মনে করেন। আবার কেউ কেউ ৬০০০ বছরের পুরোনো ও মনে করেন। সব থেকে আশ্চর্য্য জনক ঘটনা হচ্ছে যে এই মন্দিরটি ইট এবং পাথর দিয়ে তৈরী করা হয়নি।
আবার এই মন্দিরটি অন্যান্য মন্দিরের মতো পাথরের টুকরো জুড়ে ও তৈরী করা হয়নি। এটি বানানো হয়েছে একটি মাত্র পাথর কেটে! সেইজন্য এই মন্দিরটি যে কবে বানানো হয়েছিল তা নিয়ে সংশয় আছে।
পৃথিবীর যে কোনো গুহা লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে গুহা গুলি বাইরের দিক থেকে ভিতরের দিকে কাটা হয়েছে যাকে ‘কাটিং মনোলিক পদ্ধতি’ বলা হয়। কিন্তু কৈলাশ মন্দিরটি তৈরী করা হয়েছে নিচের দিক থেকে! যেটা প্রায় অসম্ভব।
এই মন্দিরের কারুকার্য দেখে আপনি বুঝতে পারবেন এই মন্দির তৈরী করতে অনেক পাথর কেটে সরাতে হয়েছে। আর্কিওলজিস্টরা অনুমান করেন যে প্রায় ৪ লক্ষ টন পাথর কেটে সরাতে হয়েছে। ইতিহাস বলছে যে এই মন্দির বানাতে ১৮ বছর সময় লেগেছিলো যা একেবারেই অসম্ভব। কেননা যদি ধরে নেওয়া যায় যে এই মন্দির বানাতে শ্রমিক প্রতিদিন ১২ ঘন্টা করে কাজ করেছিল। তাহলেও ১৮ বছরের মধ্যে ৪ লক্ষ টন পাথর কেটে সরানো সম্ভব নয়(তাহলে প্রতি বছর ৬০ টন পাথর রোজ, ৫ টন পাথর প্রতি ঘন্টায় কেটে সরাতে হতো, যা একেবারেই অসম্ভব)। এতো গেল পাথর কেটে সরানোর অনুমান। এর পর রয়েছে মন্দিরের কলাকৃতি, ভাস্কর্য্য এবং মন্দিরের ভবনগুলো। যা কৈলাশ মন্দির কে আরো রহস্যময় করে তুলেছে।
আজ থেকে কয়েক হাজার বছর আগে যখন আজকের মতো আধুনিক উপকরণ ছিল না তখন শুধুমাত্র কিছু পাথর কাটার যন্ত্রপাতির সাহায্যে এই ধরণের মন্দির তৈরী করাটা সত্যিই অবিশ্বাস্য। আর যদি প্রাচীন মানুষেরা পাথরের তৈরী যন্ত্রপাতির সাহায্যে মন্দিরটি বানিয়ে থাকে তাহলেও এই মন্দিরটি তৈরী করতে কয়েক লক্ষ বছর সময় লাগার কথা।
সব থেকে রোমাঞ্চকর ব্যাপার হলো পাহাড় কেটে যে পাথর বের করা হয়েছিল তার অবশেষ মন্দিরের আশেপাশে এমন কি কয়েকশো মাইলের মধ্যেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এখন প্রশ্ন হলো, সেই সময় যখন ক্রেনের মতো আধুনিক যন্ত্র ছিল না সেই সময় এত পরিমান পাথর কাটা ও মন্দির স্থল থেকে সরানো কিভাবে সম্ভব হয়েছিল?
এই মন্দিরে বৃষ্টির জল সংগ্রহকরার জন্য ভূমিগত নালার ও ব্যবস্থা দেখা যায়। এই মন্দিরের ছাদ, সিঁড়ি ও থাম এতটাই নিখুঁত ভাবে তৈরী যা দেখে সন্দেহ হবে যে সত্যিই কি কোনো মানুষ এত নিখুঁত ভাবে কাজ করতে পারে!!
এই মন্দিরে আরো একটি রহস্য লুকিয়ে আছে। সেটি হলো এই মন্দিরের নিচে একটি গুহা। ১৮৭৬ সালে ইংল্যান্ডের ইমান হেনরিক একটি বই লিখেছিলেন, যাতে সেই গুহাটির ব্যাপারে কিছু বর্ণনা করে গিয়েছিলেন। তিনি কৈলাশ মন্দিরের গুহা টি পরীক্ষা করেছিলেন। তিনি এমন এক ব্রিটিশ লোকের দেখা পান যিনি এই গুহার নিচে গিয়েছিলেন। সেই ব্রিটিশ লোকটি বলেছিলেন যে, যখন তিনি সেই সংকীর্ণ গুহার মধ্যে গিয়েছিলেন সেখানে তিনি একটি মন্দির দেখতে পান এবং সেখানে সাতজন লোকের সাথে সাক্ষাৎ করেন। সেই সাতজন লোকের মধ্যে একজন কে পুরোপুরি অন্য রকম মনে হয়েছিল। কারণ তাকে একবার দেখা যাচ্ছিলো আবার পরক্ষনেই হারিয়ে যাচ্ছিলো।
এই বই টি প্রকাশের পরে অনেক বিজ্ঞানী ও সেই গুহাটির খোঁজ খবর নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তারপর সরকার থেকে সেই গুহাটি পুরোপুরি ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং বর্তমানে সেটি বন্ধ হয়েই আছে। এখন প্রশ্ন হতেই পারে যে, এমন কি আছে সেই গুহার মধ্যে যার জন্য সরকার থেকে পুরোপুরি ভাবে খোঁজখবর নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে?
১৬৮২ সালে তৎকালীন রাজা ঔরঙ্গজেব এক হাজার সৈন্যের একটি দল পাঠিয়েছিলেন এই মন্দিরটি ভেঙে নষ্ট করে দেবার জন্য। কিন্তু এক হাজার জন সৈন্য তিন বছর ধরে চেষ্টা চালিয়েও মন্দিরটি নষ্ট করতে পারে নি। যখন ঔরঙ্গজেব বুঝতে পারেন যে এই মন্দিরটি নষ্ট করা সম্ভব নয় তখন তিনি মন্দিরটি ভাঙার কাজ বন্ধ করে দেন। তাহলে প্রশ্ন হলো যে, যদি কোনো মানুষের দ্বারা মন্দিরটি নষ্ট করা সম্ভব না হয় তাহলে কি আদৌ কোনো মানুষের দ্বারা মন্দিরটি নির্মিত?
আজকের দিনে মন্দিরটি তৈরী করতে অনেক কম্পিউটার, হাজার ড্রইং ও অনেক ছোট ছোট মডেল বানিয়ে এর পরিকল্পনা করতে হতো। কিন্তু সেইসময় এইসমস্ত প্ৰযুক্তি ছাড়াই মন্দির বানানো কি করে সম্ভব হলো? আমাদের কাছে এখনো এর কোনো উত্তর নেই। কেননা আজকের সমস্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ও এই ধরণের দ্বিতীয় আর একটি মন্দির বানানো একেবারেই অসম্ভব। এনসিয়েন্ট এস্টোনোট থিয়োরী অনুযায়ী এই মন্দিরের নির্মাণ এলিয়েন্ট পদ্ধতিতে হয়েছিল। আপনার ও কি সত্যিই মনে হয় যে কৈলাস মন্দিরের নির্মাণ এলিয়েন্ট পদ্ধতিতে করা হয়েছিল ? না কি আমাদের পূর্ব পুরুষদের কাছে এমন কোনো উন্নত পদ্ধতি ছিল যে আমরা এখন ও তার কল্পনাও করতে পারি না……
**বাঙালীর বেড়ানো গ্ৰুপ থেকে তথ্য( সংগৃহীত)।🌹🌹