প্রবীর বসু : মাছের ভেড়ি তৈরির বিরুদ্ধে এবার সিঙ্গুরের মানুষ একজোট হতে চলেছে, এমনই আভাস পাওয়া যাচ্ছে সিঙ্গুরের অলিগলিতে। সোমবার ৩১ জানুয়ারি কৃষাণ সভা, ডি ওয়াই এফ আই এর পক্ষ থেকে সিঙ্গুর সহ হুগলি জেলার বিভিন্ন এলাকায় রাজ্যের তৃণমূল সরকারের সিঙ্গুরের ন্যানো কারখানার জমিতে মাছ চাষের ভেড়ি তৈরির বিরুদ্ধে এবং মোদী সরকারের কৃষকদের উপর জুলুমবাজির বিরুদ্ধে পথ অবরোধ, বিক্ষোভ কর্মসূচি নেয়া হয়। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, আগে ভাত তার পর মাছ। সুপ্রিম কোর্ট চাষ যোগ্য করে জমি ফেরত দিতে বলেছিলো, মাছের ভেড়ি করতে বলে নি। টাটার ন্যানো কারখানার জমি যেখানে রাজ্য সরকার মাছের ভেড়ি তৈরির জন্য পুকুর খননের কাজ করছে সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক ভক্তরাম পান ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তিনি বলেন, এতবড় একটা শিল্প সৌধকে ধ্বংস করে ডিনামাইট দিয়ে বুলডেজার দিয়ে ধ্বংস করে এখানে শিল্প নষ্ট করে,করে, কর্মসংস্থান শেষ করে দিলো, প্রতিবাদ তো হবেই।মে কোনো যুক্তিশীল মানুষ প্রতিবাদ করবেন। রাজনীতি যে যা খুশি করতে পারেন, কিন্তু মানুষের জীবন জীবিকা নিয়ে ছেলেখেলা করছে এই সরকার। মুভমেন্ট হবে, সিঙ্গুরের মানুষ করবে, রাজ্যের মানুষ করবে। বামফ্রন্ট সরকার চেয়ে ছিল এখানে শিল্প হোক, কিন্তু এতো অশান্তি তে শিল্প করতে পারবেন না তাই টাটা চলে গেল। সুপ্রিম কোর্ট তো বলেছে চাষযোগ্য করে জমিটা চাষীদের হাতে তুলে দিতে, আমরা সেই দাবিই করে এসেছি। আজ এটা কি হচ্ছে? চাষও হলো না, শিল্পও হলো না। এখন একটা যুক্তি দেখাবে চাষ করে তো লাভ হয় না শিল্প করে লাভ হবে। ওদের যুক্তির তো অভাব নেই। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে সেটা দেখতে হবে। মানুষ ভাত পেলে তবেই মাছ কেনে। প্রত্যেক বাজারের অবস্থা খুব খারাপ, মানুষের হাতে পয়সা নেই। শিল্প বাণিজ্য তো লাটে, চাষটুকু বেঁচে না থাকলে লোকে ভাতও পাবে না। সিঙ্গুরের মানুষ আন্তরীক ভাবে চাইছেন এখানে শিল্প বাণিজ্য হোক। আমরা আন্দোলনের পথে যাবো। শুধু বাম কৃষক আন্দোলনের নেতা নয়, চাষের জমিতে মাছের ভেড়ি তৈরির বিরুদ্ধে এখানে সমস্ত বিরোধী দলেরই একসুর। ফলে আবার সিঙ্গুর খবরের শিরোনামে দ্রুত উঠে আসছে।