Arambagh Times
কাউকে ছাড়ে না

জানার কোন শেষ নেই জানার ইচ্ছা বৃথা তাই — এ যেন সেই হিরক রাজার দেশের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। যত রোষ শিক্ষাঙ্গন কে ঘিরে। সুস্থ সমাজ গড়ার কারখানা শিক্ষাঙ্গন, সুতরাং প্রানঘাতি করোনার বাহানা দিয়ে মাসের পর মাস স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শিক্ষক অধ্যাপকরা প্রতিবাদ করেননি, সোচ্চার হন নি। ঘরে বসে নিশ্চিন্তের মাস মাহিনা তুলছেন। যেন ছাত্র ছাত্রীদের ভবিষ্যত অন্ধকারে চলে গেলে কার কি। এমনই অবস্থায় আরোও একটি বিষয় অদ্ভুত ভাবে চোখে ঠেকছে, তা হলো লোকাল ট্রেন দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। রেল দপ্তর জনস্বার্থে লোকাল ট্রেন চালাতে প্রস্তুত। কিন্তু সেই করোনা মহামারীর বাহানায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার ট্রেন চলাচল বন্ধ করে রেখেছে। অথচ টোটো, অটোয়, বাসে ট্রামে, মেট্রোয় কোন্ সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা চলছে যে এর থেকে করোনা সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা নেই! মুখে বললেও কোনো যানবাহনেই স্যানিটাইজ করা হয় না। কোনো বাস পঞ্চাশ শতাংশ যাত্রী নিয়ে যাতায়াত তো করেয়না উল্টে বাদুড়ঝোলা হয়েই পরিবহন চলছে। বরং লোকাল ট্রেন চলাচল করলে মানুষ হয়তো বা একটু স্বচ্ছন্দে স্বস্তিতে যাতায়াত করতে পারতো। বিয়েবাড়িতে, অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে পঞ্চাশ শতাংশ মানুষের উপস্থিতি দিয়ে অনুষ্ঠান কার্য সম্পাদন করা হয়? যত দোষ শিক্ষাঙ্গনে আর লোকাল ট্রেন চলাচলে! সর্বোপরি এই রাজ্যে করোনা বিধি আদৌ খোদ শাসকদলের লোকজনই মানছেন না। প্রতিবাদের নামে রাস্তায় জমায়েত বন্ধ হয়েছে? কজন মুখে মাস্ক ব্যবহার করেন? পাড়ায় পাড়ায় শাসকদলের বৈঠক, সভায় , মিছিলে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা হয় নাকি? সিস্টেম হীন করোনার টিকাকরন কেন্দ্র গুলো আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রচন্ড ভিড় আর সামাজিক দুরত্ব জলাঞ্জলি দিয়ে দীর্ঘ লাইন সুরক্ষার বদলে টিকার সাথে ফাউ হিসেবে করোনাকেও আদর করে ঘরে আনছে কিনা কেউ জানেনা। করোনার কারণে এই রাজ্যের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত না হয়ে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে, এমতাবস্থায় লোকাল ট্রেন অচল রেখে অপছন্দের কেন্দ্রীয় সরকারকে হয়তো কিছুটা জব্দ করা যায় কিন্তু অপরের নাক কেটে নিজের যাত্রা ভঙ্গ হয়ে যাচ্ছে না তো! রাজ্যে আট দফা নির্বাচন আর অন্য রাজ্যের নেতাদের এনে বিজেপির নির্বাচনী সভা, জমায়েত, মিছিল এসব করার জন্যই নাকি এই রাজ্যে করোনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু এই রাজ্যে শাসকদল ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল একেরপর এক নির্বাচনী জনসভা, মিটিং মিছিল করেনি! তার জন্য যে করোনা ছড়ায় নি তার নিশ্চয়তা কে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, করোনার তৃতীয় ঢেউ আসছে এবং তা নাকি আরও ভয়ঙ্কর আকার ধারন করতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। এমতাবস্থায় রাজ্য সরকার উপনির্বাচন করার জন্য চাপ দিচ্ছে কিভাবে। উপনির্বাচন কি জনসভা মিটিং মিছিল ছাড়ায় অনুষ্ঠিত হবে? আসল কথা, হোকনা উপনির্বাচন, স্বাভাবিক হোক জনজীবন, সাধারণ মানুষজন কর্মহীন হয়ে পড়েছে, জিনিসপত্রের দাম অগ্নিমুল্য, চিকিৎসার ওষুধ সাধারণ বিত্তের সাধ্যের বাইরে। মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাকরির ফরম পূরণ করে অধির অপেক্ষায় আছে কবে পরীক্ষার দিন ঘোষণা করা হবে, শিশুদের সুশৈশব সুভবিষ্যত আজ অন্ধকারে। করোনা এখনই এই রাজ্য, এই দেশ, এই বিশ্ব থেকে পাত্তাড়ি গুটিয়ে ভ্যানিস হয়ে যাবে না। অন্যান্য রোগের মতোই করোনাকেও সাথে নিয়েই মানুষকে এগিয়ে যেতে হবে। সুতরাং সব কিছু স্বাভাবিক করে দেওয়া গেলে লোকাল ট্রেন আর শিক্ষাঙ্গনকে অচল করে রেখে কোন ফায়দা হাসিল হবে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published.