মহঃ আজিজ: আমাদের সমাজে এমন অনেক প্রতীভা আছেন যারা আপোষ না করায়, সুশীল সমাজে নাম না লেখানোই তথাকথিত বুদ্ধিজীবী মহলে উপেক্ষিত হয়েই থেকে যান। আরামবাগের ফারুক আলী মল্লিক সেই উপেক্ষিত ছড়াকার, ক্যারাম খেলোয়াড়দের মধ্যে একজন। যিনি মাত্র প্রায় ৫৪ বছর বয়সে মধ্যরাতে হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে ২৫ জানুয়ারি বুধবার অকালেই চলে গেলেন। প্রতিবাদী লেখক হিসেবে উনি সুপরিচিত ছিলেন। সমাজের বুকে যে কোনো রকম অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে ওনার কলম গর্জে উঠতো। আরামবাগ ১৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফারুক আলী মল্লিক শুধু ছড়াকারই ছিলেন না, তিনি জেলা থেকে রাজ্য স্তরে ক্যারাম প্রতিযোগিতাতেও বারেবারে অংশ গ্রহণ করেছেন ও সাফল্য অর্জন করেছেন। এমনকি স্থানীয় নবারুণ নাট্য সংস্থায় অন্যতম সদস্য হিসেবে অভিনয় চর্চাও করতেন। প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। কিন্তু একটা বিষয়ে তিনি রীতিমত পিছিয়ে ছিলেন, সেটা অর্থ। প্রচন্ড দারিদ্রের সাথে তাঁকে আজীবন লড়াই করে যেতে হয়েছে। আফসোস হয়, বেঁচে থাকতে এই মানুষটির সঠিক মূল্যায়ন কেউ করলেন না। কিন্তু তিনি যে কলমকেই ধ্যানজ্ঞান করে ছিলেন,এটাও আরামবাগে সংস্কৃতি মহলে, পৌর প্রশাসনিক স্তরে কারোর অজানা নয়। সাধারণ স্তরে অনেকেই মনে করেন, প্রচার বিমুখ ফারুক আলী মল্লিক নিজের ঢাক নিজে পেটাতে পারলে, তোষামোদ করতে পারলে হয়তো আরামবাগে সাংস্কৃতিক মঞ্চে তাঁরও একটা স্থান হতো। কিন্তু হতদরিদ্র পরিবারের হওয়াতেই হয়তো বা ফারুক আলী মল্লিকের শত প্রতীভা থাকলেও তাঁকে যোগ্য সম্মান দেয়ার দায় এড়িয়ে গেছে স্বার্থপর সমাজ।
মৃত্যু কালে তিনি তাঁর স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তানকে রেখে গেলেন। এদিন দুপুর দুটো ত্রিশ মিনিট নাগাদ তাঁর জন্ম ভুমি আরামবাগ থানার মাধবপুর অঞ্চলের বাসুলিচকে জানাজা নামাজের পর তাঁর মরদেহ ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে দাফন করা হবে।
