Arambagh Times
কাউকে ছাড়ে না

নিজস্ব সংবাদদাতা: ভাবাদিঘি গ্রামের মানুষ রেললাইনের বিরুদ্ধে নয়, অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে, এভাবেই সকলকে সহযোগিতায় নিয়ে দ্রুত রেল লাইনের কাজ শুরু এবং শেষ করার ও বিষ্ণুপুর পর্যন্ত রেল চালু করার পক্ষে ভাবাদিঘি গ্রামবাসীরা একত্রিত হলেন। এরজন্য ভাবাদিঘি গ্রামবাসীদের পক্ষে কৃষ্ণা রায়, দেবাশীষ রায়, আশিস রায়, উজ্জ্বল মালিক একটি স্মারক পত্র প্রকাশ করলেন।
সেখানে তারা তিন দফা প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রথমত, তারা প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আইসিডিএস সেন্টার দক্ষিণ দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য যদি জায়গা লাগে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দিতে সম্মত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তাদের প্রস্তাব, সেন্টার দক্ষিণ দিকে হোক আর স্কুল ঘর ও আইসিডিএস সেন্টারের ঘর রাজ্য সরকারেরই করে দেবার দায়িত্ব বলে তারা জানিয়েছেন। একই সাথে এও জানিয়েছেন, সরকার যদি দায়িত্ব পালন না করে তখন তারাই স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে তা করে দেবেন।

দ্বিতীয়ত, তাদের প্রস্তাব গ্রামে যে কটি ফৌজদারি মামলা আছে তা তুলে নিতে হবে।

তৃতীয় প্রস্তাব, প্রশাসনিক কাজ সম্পূর্ণ করে দ্রুত রেল লাইনের কাজ শুরু হোক দিঘির উত্তর দিকের শেষ প্রান্ত বরাবর। এরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি রেল দপ্তরের যে পদস্থ আধিকারিকগণ কয়েকবার ভাবাদিঘি পরিদর্শনে এসেছিলেন, বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নানা ধরনের অভিমত প্রকাশিত হয়েছে বা হচ্ছে, কিন্তু কোন ঘটনার সত্য মিথ্যা তাদের জানাই নেই। তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো আলাপ আলোচনা নাকি হয়নি। তারা বলছেন, রেললাইন যুক্তিসংগতভাবেই দিঘির উত্তর পাড় বরাবর হবার সিদ্ধান্ত যদি কার্যকরী হয় তাকে তারা স্বাগত জানাবেন। তারা বলেছেন তারা চান ভাবা দিঘী জলাশয় রক্ষা করে ওই দীঘির উত্তর দিকের শেষ প্রান্তের দিঘির উঁচু ও শক্ত পারকে ব্যবহার করে দ্রুত রেললাইন কাজ শুরু হোক রাজনৈতিক স্বার্থে তালবাহানা বন্ধ করে দ্রুত রেল চলুক মানুষ বাঁচুক পরিবেশ বাচক এবং তাদের জীবন জীবিকা ও বাচুক তারা বলেন নিজেদের ব্যর্থতা তাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে নিজেদের দায়মুক্ত করার চেষ্টাও হয়েছে কারণ সারা ভারতে রেলের লাইনম্যান পরিবর্তন করার অনেক উদাহরণ আছে এক্ষেত্রেও তা করার যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে বলেই তারা মনে করেন তারা বলেন রাজনৈতিক বুদ্ধিমত্তার অপরিপক্কতা ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণেই এতদিন পর্যন্ত রেললাইনের কাজ বন্ধ আছে। যা কখনোই কাম্য নয় তারা বলেন কত ২৫- ৩- ২০১৮ তারিখে তারা খোলা চিঠি দিয়ে তাদের বক্তব্য জানিয়েছিলেন। তেমনি ২৭-৩-২০১৭ ও ৬- ৫- ২০১৭ তারিখে রেল দপ্তরকে তারা রাজ্য প্রশাসনকে গণ দরখাস্তের মাধ্যমে তাদের দাবি জানিয়েছিলেন। উল্লেখ্য যে যখন গোঘাট থেকে ভাবাদিঘি হয়ে কামারপুকুর পর্যন্ত রেলের কোন কাজ শুরুই হয়নি। মাটি ফেলাও হয়নি তখন থেকেই তারা রেল দপ্তর ও রাজ্য প্রশাসনকে তাদের বক্তব্য জানিয়ে এসেছেন গত ২৩ ২ ২০১০ সালে প্রথম রেল মন্ত্রী বা ও ভারত সরকারকে বিষয়টি তারা জানান দীঘির উপর দিয়ে রেল লাইন না করে উত্তর পাড় বরাবর করা হোক। সাত বার গণ দরখাস্ত বিভিন্ন দপ্তরে তারা পাঠিয়েছিলেন। প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টাও নাকি তারা করেন। কিন্তু তাদের উপেক্ষা করা হয় বলে তারা ক্ষোভের সঙ্গে জানান। গোঘাট থেকে মাটি ফেলার কাজ শুরু হয়, জলাশয় রক্ষা করে, তাদের জীবন জীবিকার স্বার্থে ২০১৭ সালের ১৬ মার্চ ইতিহাসের পাতায় কালো দাগ তৈরি হয়ে যায়। শাসকদলের বাহিনীকে নিয়ে রাজ্য প্রশাসন ও রেল দপ্তর নাকি জোর করে দিঘী ভরাট করার জন্য মাটি ফেলতে শুরু করে বলে তারা জানান। তারা নাকি আপত্তি জানিয়ে বাধা দিয়েছিলেন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তাদের পাশে এসে দাঁড়ায় এবং সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। তারপরও তারা বারে বারে প্রশাসনকে জানিয়েছিলেন কিন্তু কিছুই হয়নি ওই অবস্থায় তৃণমূল কংগ্রেসের বুদ্ধিজীবীদের একটি প্রতিনিধি দল ভাবা থেকে গ্রামে এসে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করে। সরজমিনে দেখার পর তাদেরই প্রতিনিধি আরামবাগ গার্লস কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডক্টর বাণী প্রসাদ সেন নাকি এক দৈনিক পত্রিকায় তার মতামত ব্যক্ত করেছিলেন। তিনি নাকি লিখেছিলেন, তিনি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেন যতটা সম্ভব আঘাত না করে দিঘির উত্তর পাড় দিয়ে ট্রেন চালানো যাবে না এই কথা আজকের উচ্চস্তরে রেল প্রযুক্তির যুগে একেবারে অচল। কর্ণাটক, গোয়ার কঙ্কন উপকূল ও কাশ্মীর উপত্যকায় রেলের প্রযুক্তিগত সাফল্য আজ সুবিদিত। সুতরাং প্রয়োজন রাজনৈতিক বুদ্ধিমত্তা আর প্রশাসনিক দক্ষতা। জলাশয় ও পরিবেশ রক্ষা করে জনস্বার্থে দীঘির উত্তর দিকের শেষ প্রান্ত বরাবর রেল লাইনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করে কামারপুকুরের সঙ্গে গোঘাট কে জুড়ে দেওয়া হোক।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published.