আরামবাগ টিভির এডিটর সফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে লাগাতার পুলিশি হয়রানী চলছে। আদালত থেকে সফিকুল ইসলামকে একেরপর এক রক্ষা কবচ দেয়া হয়েছে। কিন্তু যখন কোনো ভাবেই সফিকুল ইসলামকে শাসকদলের বিরুদ্ধে সংবাদ করা থেকে বিরত রাখা যাচ্ছেনা, তখন লালবাজার থেকে মঙ্গলবার একটি নোটিশ ধরানো হয় অসংখ্য ধারা দিয়ে, যার মধ্যে আছে গুপ্তচর বৃত্তি ও রাষ্ট্রদ্রোহের ধারা। এর আগে রাতের অন্ধকারে সফিকুলের বাড়িতে মই দিয়ে বেয়ে দরজা ভেঙে আরামবাগ পুলিশ করোনা কালীন সময়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়ম জলাঞ্জলি দিয়ে ঢুকে তল্লাশির নামে রীতিমত তছনছ করে সফিকুল ইসলামকে ও মহিলা পুলিশ ছাড়া এবং রাতে মহিলাদের আটক করা, গ্রেফতার করা আদৌ যায় কিনা সেসব চুলোয় দিয়ে সফিকুলের স্ত্রীও ছোট্ট ছোট্ট শিশু সন্তানদের থানায় তুলে আনে এবং তাদের জেলে পাঠানো হয়। সাংবাদিকের কলম ও ক্যামেরা দমিয়ে দিতে এরপরও সফিকুলের বাড়িতে অসংখ্য বার পুলিশ বিনা নোটিশে যখন তখন যাচ্ছেন, বিভিন্ন থানায় ডেকে এনে ঘন্টার পর ঘন্টা ননস্টপ জেরা করছেন। এবার একেবারে লালবাজার থেকে নোটিশ ধরানো হলো,আর তাতে অসংখ্য ধারার পাশাপাশি একেবারে গুপ্তচর বৃত্তি ও রাষ্ট্রদ্রোহের ধারা! আর ঘুঁটে যখন জ্বলেই চলেছে তখনও গোবররা হেসেই চলেছে। এ কেমন অদ্ভুত আচরণ! আমরাই যারা গৌরী লঙ্কেশের অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে সোচ্চার হচ্ছি, পথে নামছি, সেই আমরাই আমাদের ঘরের পাশেরই একজন সাংবাদিকের প্রতি পুলিশের স্বৈরাচারী আচরণে চোখে ঠুলি পরিয়ে রেখেছি! পাছে এই কোপ আমার, আমাদের উপর নেমে আসে? এর থেকে পদলেহন ভালো? আমি সুখে থাকবো, ব্যাস! আমাকে এক সাংবাদিক (!) বলছিলেন সুখে থাকতে ভুতের কিল খাওয়ার কি দরকার। শাসকদলের বিরুদ্ধে মুখ খোলার থেকে কলম বিক্রি করে নিজের আখের গোছানোই বুদ্ধিমানের কাজ। পুলিশকে দিয়ে শাসকদল কি না করাতে পারে। তাহলে সফিকুল ইসলাম বোকা! নাকি যে তথ্য তুলে ধরছেন সেগুলো সব ভুলে ভরা? সাংবাদিকের কাজ কি? ড্রেনটা দেখিয়ে দেয়া নয়? পুলিশ, শিক্ষক, ডাক্তার, নার্সিং স্টাফ, ইঞ্জিনিয়ারি থেকে সুইপার যে কোনো পেশার মানুষ তাঁর নিজের কাজ সঠিক ভাবে সম্পন্ন করবেন, বিনিময়ে মাসান্তে কাজের মুল্য বুঝে নেবেন, এর মধ্যে বাহাদুরি কি? কিন্তু পেশার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করলে সেটাই অস্বাভাবিক, আর সেটা তুলে ধরাই সাংবাদিকদের প্রকৃত কাজ। একজন জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন মানেই সেই এলাকার মানুষের সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে বের করে এলাকার উন্নয়ন নিশ্চিত করা তার কাজ। এলাকার মানুষজন সেজন্যই প্রতিনিধি নির্বাচন করেন। কিন্তু সেই প্রতিনিধি যদি দূর্নীতিপরায়ন হন, উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ অর্থ যদি নয়ছয় হয় সেটা তুলে ধরাই সাংবাদিকদের প্রকৃত কাজ। সাংবাদিকরা সজাগ থাকলে, অন্যায়টা দেখিয়ে দিলে খুন করে দেয়া হবে? ধনেপ্রাণে মারা হবে, হয়রানী করা হবে? এমনকি গুপ্তচর বৃত্তি, রাষ্ট্রদ্রোহের ধারা চাপানো হবে!! হিটলারি রাজ চলছে নাকি! এভাবে কতজন সফিকুলের কন্ঠরোধ করা যাবে?