Arambagh Times
কাউকে ছাড়ে না

গণতন্ত্রের অন্তিম স্টেশনের নাম কোর্ট অফ জাস্টিস । সেই মুক্তি মন্দিরের সোপান তলে টেট উত্তীর্ণ চাকরি প্রার্থীরা দিনের পর দিন মাথা খুঁড়ে মরছে। আজ সংবিধান দিবসে এটাই আমাদের বড় প্রাপ্তি। কোর্ট থেকে কোর্ট ঘুরে হাইকোর্ট থেকে সুপ্রীমকোর্ট আবার সুপ্রীমকোর্ট থেকে হাইকোর্টে বছরের পর বছর ধরে তাদের মামলা চলছেই তো চলছে। বছরের পর বছর চলে যায় । তাদের চাকুরির বয়স পার হয়ে যায় কিন্তু যোগ্য প্রার্থীদের চাকরি পাওয়ার কোনো সম্ভবনা দেখতে পাচ্ছি না। হান্সের মতো জাস্টিস অভিজিৎ গাঙ্গুলি একা কতক্ষণ নদীর পাড় রক্ষা করবেন ?

তারা শান্তিপূর্ণ ধর্না দিলে পুলিশ অহিংস আন্দোলনকে সহিংস করে তোলে। রক্তাক্ত হয় রাজপথ । বিভিন্ন ধারাতে তাদেরকে কেস দিয়ে জেলে পুরে দেয়। পরে তারা বেইল পায় কিন্তু সাময়িক বেইল পেলেও ওই কেসের কোন নিষ্পত্তি মেলে না । নিষ্পত্তি কবে কেউ জানে না। তারা চাকরির বিনিময়ে কেসে ফেঁসে যায়।
যার শুরু আছে তার শেষ আছে জানি। কিন্ত কেসের শুরু আছে শেষ নেই। কারণ কোর্ট অফ জাস্টিস থেকে আমরা শুধু সময় পাই। তাই কোর্ট অফ জাস্টিসকে কোর্ট অফ টাইম বলা ভালো । সময়ের বিচার অসময়ে পেলে বিচার গুরুত্বহীন হয়ে যায় । এমন বিচার পেতে কেউ কোর্টের দারস্থ হতে চায় না । সরকারি কর্মচারীদের ডিএ র মামলা এবং টেট উত্তীর্ণ চাকরি প্রার্থীদের মামলা দুটো তার জ্বলন্ত নজির। অন্যদিকে পুলিশ ভয়ে, ভক্তিতে কিংবা ঘুষ নিয়ে মনের মাধুরী মিশিয়ে কেসের যত ধারা আছে তাদের বিরুদ্ধে লিখে পেনের সরু ডগা আরো সরু করে । অনেক সময় পুলিশের মিথ্যা লেখার উপর দাঁড়িয়ে বছরের পর বছর মামলা চলতে থাকে। পরে অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারী দুটোকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। ততদিনে ওই কেসের আইও ও গন্ হয় । তাই আমাদের বিচার ব্যাবস্থা বাস্তবতাকে হারিয়ে অবাস্তবতার উপর দাঁড়িয়ে আছে। সাক্ষী কোর্টের কাঠ গোড়ায় দাঁড়িয়ে গীতা ছুঁয়ে’ যা বলিব সত্য বলিব’ কখনো সত্য বলে না কারণ ততোদিনে ওই ঘটনা মনে থাকার কথা নয় । পরশু দিন দুপুরে কি দিয়ে ভাত খেয়েছি আমরা মনে করতে পারি ? তাই গণতন্ত্রের ওই মুক্তির মন্দিরে কেউ যেতে চায় না । ওমুখো হতে এখন কে সাহস দেখায় ? এখানে মুক্তি নেই, কেবল বিড়ম্বনা বাড়ায় ।
আমাদের গণতন্ত্র এখন একটা আস্ত গাধা । তার পিঠে যে যার খুশি মতো যা কিছু তা বহন করে নিয়ে যাচ্ছে গণতন্ত্রের নাম করে । এমন গণতন্ত্র সত্যি কী আমাদের প্রয়োজন আছে যেখানে পুলিশ রাষ্ট্রীয় আইন নিয়ন্ত্রন করে , কোর্টের দীর্ঘসূত্রিতা কেবল বিড়ম্বনার কারণ হয়ে ওঠে ? জনগণের সমস্যার সমাধান কোথায়? এমন পরিস্থিতিতে জনগণের সমস্যা আরো জটিল রূপ ধারণ করে ।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published.