Arambagh Times
কাউকে ছাড়ে না

শুধু সরকারি কর্মীদের অধিকারের ডি এ দিতে হলেই সরকারের নানা বাহানা, জেলায় জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকে মঞ্চে মঞ্চে খোদ মুখ্যমন্ত্রী বলেন থাকেন বাড়তি কোনো উন্নয়ন করা যাবে না, টাকা নেই। লক্ষ্মীর ভান্ডার চালাতেই নাকি হিমসিম খাচ্ছেন। জেলা সফরে, প্রশাসনিক বৈঠকে বিধায়করা, সভাধিপতিরা, বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, কর্মাধ্যক্ষরা উপস্থিত থেকে তাদের এলাকায় নতুন কোনো কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবি তুলে বহু ক্ষেত্রেই ভগ্ন মনোরথ হয়ে বসে পড়তে বাধ্য হন, মিডিয়ার দৌলতে সকলেই লক্ষ করেন। কারন একটাই, কোষাগার খালি, টেনেটুনে খুব কষ্ট করে রাজ্য চালাতে হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীকে। অথচ প্রয়োজন নেই সবার জন্য সাইকেল, তবু দেয়া হচ্ছে, বহু স্কুলে পড়ে পড়ে লাট খেয়ে থাকা সাইকেলে জং ধরে গেছে। কন্যাশ্রীর টাকা সত্যিকার অর্থেই আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মেধাবী ছাত্রীদের দিলে প্রকৃত কাজ হতো, আর কন্যাশ্রী প্রকল্পে ছাত্রীরা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত বছরে যে পরিমাণ অর্থ পান তাতে এক মাসের টিউশুনি ফিজও হয় কিনা সন্দেহ, পাঠ্য বইয়ের দাম আকাশ ছোঁয়া, কন্যাশ্রীর টাকাতেই পড়াশোনার বিপুল অঙ্কের খরচ মিটে যায় এটা আদৌ কতটা বাস্তব নিরপেক্ষ ভাবে খোঁজ খবর নিলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে। আর যদি পড়াশুনা করার জন্যই কন্যাশ্রী প্রকল্পে ছাত্রীরা অর্থ পেতে পারেন, তাহলে এমন কোনো নামের প্রকল্প হোক যেখানে ছাত্ররাও সেই অর্থ পেতে পারেন। কোন্ আইনে আছে, ছাত্র হলেই আপনাআপনি আকাশ থেকে অর্থ ঝরে পড়বে? তাদের শিক্ষার দরকার নেই? এ এক অদ্ভুত সিস্টেম!
এখন অফ লাইনেই ক্লাশ হয়, তাহলে ট্যাবের প্রয়োজন কোথায়? খোদ আরামবাগ মহকুমাতেই ১১ হাজার ৬৬৮ জন ১০ হাজার টাকা মূল্যের ট্যাব পাচ্ছেন। অঙ্কটা কম নয়! এমন গোটা রাজ্যে কয়েক লাখ ছাত্র ছাত্রীকে ট্যাব বিলি করা হবে। বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে যে ট্যাব বিলি করা হয়েছে এবং হচ্ছে আদৌ তার অপব্যবহার হচ্ছে কিনা কখনও নিরপেক্ষ তদন্ত হয়েছে? স্রোতের টানে গা ভাসানো চলছে। অনেকটা ” তোমার ছেলে পরমানন্দ, যত উচ্ছন্নে যায় ততই আনন্দ।” গেম খেলা সমাজের একটা বড় অসুখে পরিনত হয়েছে। জন্ম থেকে শিশুদের হাতে মোবাইল। প্রথমে কার্টুন দেখতে দেখতে শিশুরা মোবাইল এডিক্টেড হয়ে যায়, অধিকাংশ মা বাবা তাদের শিশু সন্তানদের হাতে মোবাইল তুলে দিচ্ছেন, কিশোর বয়সী ছাত্র ছাত্রীদের হাতে সরকার ট্যাব তুলে দিচ্ছে। অথচ স্কুলের মাঠে আর শৈশব খেলেনা, সময় নেই, প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড় চলছে, মাঠে ময়দানে এখন নানা ধরনের সরকারি, বেসরকারি উৎসব, মেলা হয়। রাজ্য জুড়ে উৎসবে সরগরম। ক্লাবে ক্লাবে নানা বাহানায় টাকা ঢালা হচ্ছে‌ ক্রীড়ার মান উন্নয়নে, পুজা পার্বনে। ক্রীড়ার এতো মান উন্নয়ন হচ্ছে ক্লাব গুলোতে যে অর্থের অভাবে কতো যোগ্য প্রতীভা অকালে ঝরে যাচ্ছে নয়তো ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে। অন্যান্য খেলা দুরের কথা, পাড়ার পরিচিত খেলা ফুটবল, ক্রিকেট টুর্নামেন্টেও বিদেশি খেলোয়াড়দের ভাড়া করে আনতে হয়।
যে বিপুল পরিমাণ অর্থ এভাবে ব্যয় করা হচ্ছে, সেই অর্থ দিয়ে রাজ্যের ভাঙ্গাচোরা কত রাস্তা পুর্নাঙ্গ সংস্কার করা সম্ভব হতে পারতো, হাসপাতালে হাসপাতালে জীবনদায়ী ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনা যেতে পারতো। সরকারি দপ্তরগুলোতে চেয়ারগুলো কর্মী অভাবে খালি পড়ে আছে দীর্ঘ বছর, স্কুল কলেজে উপযুক্ত সংখ্যক শিক্ষক শিক্ষিকা শিক্ষা কর্মী নেই, কর্মসংস্থান হলে কাজে গতি বাড়তো, উন্নয়ন হতো। না, তা হবার নয়। তার থেকে কিশোরবয়সীদের হাতে অফ লাইনে ক্লাশ হওয়া সত্ত্বেও অনলাইনে ক্লাশ করার বাহানায় স্মার্ট ফোন তুলে দেয়া “সরকারের দৃষ্টিতে অধিক গুরুত্বপূর্ণ !”

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published.