Arambagh Times
কাউকে ছাড়ে না

পুলিশ নাকি রক্ষক? পুলিশ নাকি জনসংযোগের উদাহরণ? পুলিশ রক্ষক তো বটেই, ভুল তো না, পঞ্চায়েতের সদস্য কি কাউন্সিলর থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের অনেককেই দেখা যায় সিকিউরিটি হিসেবে পুলিশ সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে। নেতা মন্ত্রীদের পাহারা দেয়ার কাজে পুলিশের নিষ্ঠার কোনো ঘাটতি দেখা গেছে? আমজনতা যারা, তাঁরা একটু বেশি প্রত্যাশা করেন, ভাবেন, পুলিশ শব্দ টা একেবারেই নিরপেক্ষ। অথচ কুচুটে নিন্দুকেরা বলে, পুলিশ নিরপেক্ষ আর সোনার পাথর বাটি একই রকম। তারা স্বপক্ষে ব্যাক্ষাও করে, সাধারণ মানুষজন কোনো বিপদজনক বা অসহায় পরিস্থিতিতে কোথায় যাবে? পুলিশের কাছে? প্রথমেই শুরু হবে অবস্থা আর বিষয় বুঝে ধাঁধানি, অনেক সময় মা মাসি উদ্ধার করা ভাষা যোগে ঘাড়ধাক্কাও দেয়া হয়, চোখের জল, আকুল আবেদন এসবে পুলিশের হৃদয় ভেজেনা। যাতে ভেজে সেটা অবশ্য আগে থেকে শুনিয়ে রাখলে খাতির মেলে। জি ডি নং পাওয়া টা আইনত হক মানুষের। কি আশ্চর্য, পুলিশের আইন আর সংবিধানের আইন কি এক করতে আছে!! নিন্দুকেরা বলে, পুলিশ যখন যেমন তখন তেমন আইন তৈরি করে, তারপর কানাকানি হয় নেতাদের সঙ্গে। অভিযোগকারী মানুষটি কোন পক্ষের সেটাই বড়ো কথা। কোনো পক্ষের না হলে তো কথাই নেই, পুলিশের খিদে বেশি,পেট মন সহজেই কিছুতেই ভরতে চায়না, দর কষাকষি চলে। এফআইআর করতে গেলে পুলিশ দাঁত খিঁচিয়ে তেড়ে আসে, খাটতে হবে যে, সময় কোথায়। সময় কোথায়? ওটাই তো ডিউটি। নিন্দুকেরা বলে, ধুর বোকা, ডিউটি কিসের? তোমরা ঝামেলায় জড়াবে, জিনিসপত্র খোয়াবে,আর থানায় এসে এফআইআর করবে, পুলিশ দৌড়াবে উদ্ধার করতে? কাজ নেই আর? নিন্দুকেরা ব্যাক্ষাও করে, সক্কাল থেকে রাত পর্যন্ত, আবার রাত থেকে ভোর পর্যন্ত পুলিশের গাড়ি হয় চক্কর দিয়ে অথবা ঠাই গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখে সমস্ত অবৈধ কাজকে বৈধ করে দেয় নজরানার বিনিময়ে। একেবারে প্রকাশ্যে হাত বাড়িয়ে টাকা নিয়ে ওভার লোড, গোরু বোঝাই গাড়ি ছেড়ে দেয়া হয়, ব্রীজের দুই পারে , বিভিন্ন ফাঁকা জায়গায় এভাবেই অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে এই গুরুদায়িত্ব কিন্তু পুলিশ শীত গ্রীষ্ম বর্ষা করে চলে। নিখুঁত ভাবে। আচ্ছা পুলিশের এভাবে টাকা তুলতে লজ্জা বোধ হয় না? নিন্দুকেরা বিরক্ত হয় বোকা বোকা প্রশ্ন শুনে, বলে, লজ্জার কি আছে? এটাও একটা শিল্পের পর্যায়ে পৌঁছেছে। কে কত বেশি কালেকশন (বাটপারি বললে খারাপ শোনায়) করতে পারলো সেটাই বড়ো। নাহলে উপরওয়ালা দের কাছেই অপদার্থ বদনাম পেতে হয় তাই নয়, ঘরের বউ পর্যন্ত বিরক্ত হতে পারে। পুলিশ যে সব সময় নিজে উপস্থিত থেকে এসব করে তা নয়, সিভিক ভলেন্টিয়ার, পুলিশের গাড়ির চালক (পুলিশ কর্মী নয়, সিভিকও নয়, বেসরকারি চালক মাত্র) এরাও সমান তালে এই কাজ করে। বিনা রসিদে টাকা তোলার বিনিময়ে উপযুক্ত চালানহীন একেরপর এক অবৈধ গাড়ি বৈধ হয়ে গন্তব্যে পৌঁছে যায়। হতে পারে তা পাচার, হতে পারে তা চোরাই। বিভিন্ন পয়েন্টে এমন কত পুলিশের গাড়ি দাঁড়িয়েই থাকে অথচ দিনে বা রাতে সাধারণ মানুষজন বিপদে পড়লে থানা নাকি দপ্তর প্রয়োজনীয় গাড়ি না অনুমোদন করায় গাড়ির অভাবে সময়ে অকুস্থলে পৌঁছতে পারে না। পুলিশকে চটিয়ে পার পাওয়া যাবে না। আবার শক্তিশালী নেতাদের আদেশে নিরীহ মানুষের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ধরিয়ে বা ঘরে বোমা, মদ, হেরোইন চরস গাঁজা রেখে পুলিশ ফাঁসিয়ে দিতে পারে না এমন নিশ্চয়তা নেই, নিন্দুকের নিন্দা করা স্বভাব। বলে কিনা পুলিশ হলো লাইসেন্স প্রাপ্ত মস্তান। না হলে পুলিশের মুখে এত অশ্রাব্য ভাষা কেন? ইচ্ছা মতো যাকে খুশি মারধোর, যাকে খুশি তুলে নিয়ে এসে ফাঁসিয়ে দেয়া এসব করে কিভাবে? পুলিশ নাকি কখনো কারো মিত্র হয়না। অনেকটাই জলের মতো, যখন যে পাত্র, তখন সেই পাত্রের আকার ধারণ করে। তবে নিন্দুকেরা যাই বলুক, এটুকু বাস্তব পুলিশ শুধু মাত্র দুর্বলের যম।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published.