হাতে গোনা কদিন পরেই মাতৃকল্পে মায়ের বোধোন। সাবেকি আর থিমের পুজো ঘিরে উন্মাদনা সৃষ্টি হবে। জনপ্লাবনে ভাসবে জনপদ। মা দুর্গা আসছেন বাপের বাড়িতে। প্রতি বছরই এভাবেই মহা মিলনোৎসব হয়। থিমের পুজো সামনে রেখে কত লক্ষ কোটি টাকার বাজেট পুজোর এই চারটি দিন ঘিরে। মায়ের পুজোর উদ্যেশ্য শুধু আনন্দে, হৈ হুল্লোড়ে মেতে ওঠা তাতো নয়। অসুরোনাশিনী মায়ের কাছে মনের মধ্যে লালিত আসুরিক গুনাবলীর বিনাশের প্রার্থনার জন্য মহিষোমর্দিনীর আহ্বান করা হয়। কিন্তু বাস্তবে কি তাই হয়! প্রতিটা দিন চোখ রাখলে কান পাতলেই শোনা যায় প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই মাতৃজাতির অপমান, অবহেলা, লাঞ্ছনা, অত্যাচারের ক্ষমার অযোগ্য ঘটনা ঘটেই চলেছে। কোনো শাস্তি দিয়েও তা রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাহলে কিসের মাতৃ আরাধনা? প্রতি দিন কোথাও না কোথাও ধর্ষণের ঘৃন্য ঘটনা ঘটছেই।ধর্ষণকারীকে আড়াল করার চেষ্টা হয়, কিন্তু ধর্ষিতার বিনা অপরাধে সামাজিক অসম্মান করা হয়। ঘরে ঘরে বৃদ্ধা মাকে চুড়ান্ত অবহেলা করা হয়। শেষ বয়সে হয় ফুটপাতে, রেল স্টেশনে ফেলে দিয়ে আসা হয়, কিঞ্চিত ভাগ্য ভালো হলে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেয়া হয়। মারধোরের ঘটনা তো ঘটেই। মঞ্চে মাতৃজাতির উদ্যেশ্যে বড়ো বড়ো ভাষন , স্যোসাল মিডিয়া মাদার্স ডে তে মাতৃভক্তির ছড়াছড়ি, ক্যামেরার সামনে তাকিয়ে মায়ের হাঁটুর নীচে বসে পায়ে ফুল দেয়ার গা গুলনো ছবি পোস্ট করে ভক্তি দেখানো, বাড়িতে স্ত্রীর প্রতি অবহেলা, কন্যা ভ্রূণ হত্যা করা, নারী পাচার করা এসব নিত্য দিনের সংবাদ। এর পরেও মাতৃজাতির অসম্মান আর মাতৃ আরাধনা পাশাপাশি চলতে পারে? হ্যাঁ, যদি মনে হয় প্যান্ডেল থিম আর আড়ম্বরের জন্য মা দুর্গাকে ঢাল করা হয় মাত্র, তাহলে কিইবা বলার থাকে! ৬০ হাজার টাকাও তো কম প্রাপ্তি নয়! তা না হলে শুধু মাত্র এই রাজ্যেই দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, মনসা, শীতলা যে রূপেই হোক এই দেবিদের যারা পুজোর উদ্যোগ নেন তাঁরা যদি নিজ নিজ এলাকায় কঠোর ভাবে মহিলাদের সম্মান রক্ষায় যত্নবান হন তাহলে নতুন করে আর মৃন্ময়ীর পুজার প্রয়োজন হয়!!