Arambagh Times
কাউকে ছাড়ে না

সব্যসাচী বন্দ্যোপাধ্যায় :

১৯৯০ সালে গাথানি থেকে ভাল লাগা গান নামে একটি ক্যাসেট প্রকাশিত হয়।শিল্পী নির্মলা মিশ্র।দুপিঠ মিলিয়ে দশটি গান।পুরোটাই লাইভ রেকর্ডিং।নির্মলা মিশ্রর কিছু কিছু গান আমি রে উভয়ডিওতে শুনেছি।কিন্তু এই ক্যাসেটে দুটি গান ছিলো এমন যা আগে শুনিনি।একটি ছবির বল তো আরশি তুমি এবং অন্যটি এই বাংলার মাটিতে মাগো জন্ম আমায় দিও।ঐ ক্যাসেটেই ক্ষুধা ছবির ওরা ঘুমায় আবার জাগে গানটা শুনে যেন গায়ে কাঁটা দিত।
সুযোগ এলো ১৯৯২ সালে আমাদের এখানে একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে সামনাসামনি দেখবার।বেশ ঝলমলে কালো একটা শাড়ি,কানে ঝোলা দুল,একমাথা কোঁকড়া চুল, চোখে মোটা কাঁচের বেশ ফ্যাশানেবল চশমা,নির্মলা মিশ্র গ্রীন রুম পুরো জমিয়ে দিয়েছেন গল্পে।

  • আপনি একটু আবেশে মুখ ঢেকে গানটা গাইবেন ?
    মৃদু গলায় বলেছিলাম আমি।
  • এই ছেলে আমাকে এই গান গাইতে বলছো আমার প্রেশার কত জানো?
    বললেন তিনি।
    মঞ্চে উঠে দু একটা গান গাইবার পর বললেন,
  • এই ছেলে যে আমাকে আবেশে মুখ ঢেকে গাইতে বলেছিলে উঠে দাঁড়াও। উঠে দাঁড়ালাম।
  • তোমার গানটা গাইছি।এই গান কার লেখা আর কার সুর জানো?
    বললাম আমি।
  • ওরে বাবা ছেলে কত জানে।
    এই বলে গাইলেন গানটা।সেদিন কাঠঠোকরা বউকে মান করতে বারণ করে কথা শুনতে বললেন এই গানের মধ্য দিয়ে।
    মান্না দে একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন যে আশিতে আসিও না ছবির গান রেকর্ডিং করতে এসে শুনেছিলেন যে সহশিল্পী নির্মলা মিশ্র গুলি খেলছেন। প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনের শেষের দিকের অনুষ্ঠানগুলিতে তাঁকে আগলে রাখতেন নির্মলা মিশ্র।বাংলা গানের আকাশটা ছিলো তারকাময়।কিন্তু এইবছরের শুরু থেকেই তা অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে।
    তোতাপাখী এতদিনে বোধহয় নির্মলা মিশ্রকে তাঁর মায়ের কাছে পৌঁছে দিল।
    প্রণাম এই শিল্পীকে।
Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published.